শিরোনাম
চাটখিলের বাদুলী জামে মসজিদের নুতন কমিটি গঠন আদিলের ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি লাভ ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের খবরে বৃষ্টি উপেক্ষা করে নোয়াখালীতে আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ    ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’: হাতিয়ার সঙ্গে সারা দেশের নৌ যোগাযোগ বন্ধ আওয়ামীলীগ নিষিদ্ধ ও আদালতে আওয়ামীলীগের শ্লোগানের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ ও কোর্ট পি.পির কক্ষে তালা   ২ দিনের রিমান্ডে সাবেক এমপি একরামুল নোয়াখালীতে আদালত প্রাঙ্গণে আ.লীগ নেতাকর্মিদের স্লোগান হাতিয়ায় সোনাদিয়া চৌরাস্তা বাজার বণিক সমিতির নির্বাচন সম্পন্ন ৭২-৭৫ সালের শাসনামলে মুজিববাদ ও রক্ষীবাহিনী মানুষের মৌলিক অধিকার কেড়ে নেয়:সমন্বয়ক হান্নান মাসউদ  লক্ষ্মীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএম আরিফ গ্রেপ্তার

ইসলামী সঙ্গীত গেয়ে জনপ্রিয় হাতিয়ার জমজ দুই ভাই

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ৩ এপ্রিল, ২০২৪
  • ১০৭১ Time View

স্টাফ রিপোর্টার-

অসাধারণ গানের গলা। নেননি কোনো প্রশিক্ষণ, কেবল শুনে শুনে করেছেন রপ্ত। ইসলামী সঙ্গীত গেয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছেন নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার জমজ দুই সহোদর মো. হাসান ও মো. হোসাইন।

মো. হাসান ও মো. হোসাইন হাতিয়া উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের পূর্ব বড় দেইল গ্রামের অলিমাল হাজীর বাড়ির আবু বকর ছিদ্দিকের ছেলে। দশ ভাই-বোনের মধ্যে জমজ কেবল মো. হাসান ও মো. হোসাইন।

কৃষক পরিবারে জন্ম নেওয়া জমজ দুই সহোদর ছোটবেলায় পড়েছেন বুড়িরচর আহম্মদিয়া আলিম মাদরাসায়। তারপর হাতিয়া দ্বীপ সরকারি কলেজ থেকে বাংলায় অনার্স শেষ করেছেন।

জানা যায়, ছোটবেলায় বুড়িরচর আহম্মদিয়া আলিম মাদরাসায় পড়ার সময়ে ২৬ মার্চের একটি দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে সহপাঠীর ধাক্কায় আহত হন হাসান। তারপর দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন। তখন প্রতিজ্ঞা করেছেন আর কখনো ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবেন না। সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। এরপর থেকে সকল প্রতিযোগিতায় তারা প্রথম ও দ্বিতীয় হতেন। বর্তমানে বাবার সঙ্গে নিয়মিত কৃষি কাজ করেন তারা। নিজেদের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট না থাকলেও অন্যরা তাদের গান ফেসবুকে ছাড়েন। এতে মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে তাদের ভিডিও।

মো. হাসান বলেন, বাবা-মাসহ ১২ সদস্যের কৃষক পরিবারে আমাদের পড়াশোনা চালিয়ে নেওয়া অনেক কষ্টের ছিল। দুই ভাই এক বই দিয়ে পড়াশোনা করেছি। সারারাত ধানের কাজ করে সকালে পরীক্ষা দিয়েছি। আমাদের জীবনে কোনো পরীক্ষায় ফেইল নেই। ছোটবেলার দৌড় প্রতিযোগিতায় আহত হওয়ার পর প্রতিজ্ঞা করেছিলাম আমরা শুধু সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যুক্ত থাকব। তাই শুনে শুনে গান রপ্ত করেছি। আমাদের কোনো প্রশিক্ষক নেই। আমাদের গজল শুনে মানুষ আনন্দ পায় এটাই আমাদের আনন্দ।

মো. হোসাইন বলেন, ফেসবুকে আমাদের কোনো গজল আমরা ছাড়িনি। মানুষ আমাদের গান শুনে, পছন্দ করে তাই আমরা গান গাই। সেখান থেকেই মানুষ গান গুলো ছাড়ে। তবে আমাদের কোনো ফেসবুক অ্যাকাউন্ট নেই। আগামী দিনে যদি মানুষের ভালোবাসা পাই তাহলে আমরা আরও দূরে যেতে চাই।

মো. হাসান বলেন, আমরা জীবনে যত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছি তাতে আমি প্রথম হয়েছি বা আমার ভাই হোসাইন প্রথম হয়েছে। তবে এসবে আমাদের সংসার চলে না। কৃষক বাবাকে সহযোগিতা না করলে আমাদের পেটে ভাত জুটে না। তাই আমরা দিনশেষে কৃষি কাজ করি। আমরা মানুষকে গজল, গান শুনিয়ে আনন্দ দিয়ে থাকি। তবে এসব আনন্দ ক্ষণিকের। তাই আমরা ভালো কিছু করতে চাই। মানুষের দোয়া চাই।

স্থানীয় বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম বলেন, দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার মানুষ খুব পরিশ্রমী। জমজ দুই ভাই হাসান-হোসাইন অত্যন্ত পরিশ্রমী ও কর্মঠ। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গান গেয়ে তারা সুনাম কুড়িয়েছে। কিন্তু তাদের মেধা ও প্রতিভা বিকাশের জায়গা পাচ্ছেনা। কোনো সুযোগ পেলে নিঃসন্দেহে তারা ভালো করত।

হাসান-হোসাইনের বাবা আবু বকর ছিদ্দিক বলেন, আমার জমজ দুই ছেলে ইসলামি গান, কুরআন তিলাওয়াত করে অনেক পুরস্কার অর্জন করেছে। এগুলো দিয়ে আমাদের সংসার চলে না। একটা অনিশ্চিত জীবন যাপন করছে। একটা চাকরি বাকরি হলে তাদের জন্য ভালো হতো। তাহলে এই সংস্কৃতি চর্চা তারা চালিয়ে যেতে পারত। আমি কৃষক মানুষ তাই তাদের দিয়ে কৃষি কাজ করাই। এর থেকে বেশি কিছু করার আমার সুযোগ নাই।

বুড়িরচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, জমজ দুই ভাই মেধাবী এবং পরিশ্রমী। তারা খুব ভালো গান গায়। তারা যে এতো ভদ্র এটা আমার ভালো লাগে। আমি প্রায় আট বছর ধরে তাদের গান শুনি। সময় পেলে তাদের নিয়ে জমিনে বসে গান শুনি। হাতিয়ায় কোনো প্রতিযোগিতা হলে তারা ফার্স্ট হয়। সরকারি বা বেসরকারিভাবে তাদের জন্য কিছু করা গেলে ভালো হতো। আমি তাদের পাশে ছিলাম, আছি এবং থাকব।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *